জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক প্রশাসন বিভাগের স্নাতকোত্তরের ফলাফলে এক ছাত্রী সিজিপিএ-৩.৯৭ পাওয়ার ঘটনাটি আলোড়ন তুলেছে শিক্ষার্থীদের...
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক প্রশাসন বিভাগের স্নাতকোত্তরের ফলাফলে এক ছাত্রী সিজিপিএ-৩.৯৭ পাওয়ার ঘটনাটি আলোড়ন তুলেছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। যেখানে স্নাতকে তার সিজিপিএ ছিল ৩.৫১। স্নাতকোত্তরে এটিই ওই বিভাগের সর্বোচ্চ ফলাফল বলে বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। তবে ওই ছাত্রীর এ অর্জনের পেছনে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক ড. নুরুল আমিনের অনৈতিক হস্তক্ষেপ আছে বলে অভিযোগ করেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
ভিসি বরাবর লিখিত এক অভিযোগ পত্রে পরীক্ষা কমিটি সভাপতির বিরুদ্ধে ওই ছাত্রীকে অনৈতিক সুবিধা দেয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। ওই ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বানাতেই এ সুবিধা দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে সংশ্লিষ্টরা।
অভিযোগপত্র সূত্রে জানা যায়, চকমপ্রদ ফলাফল করা আতিফা কাফিকে এগিয়ে দেয়ার জন্য অভিযুক্ত পরীক্ষা কমিটির সভাপতি নিজের প্রচেষ্টায় তড়িঘড়ি করে ৬৯ দিনের মাথায় ১৩ই ফেব্রুয়ারি ফলাফল প্রকাশ করে। যেখানে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস বলছে, এমন দ্রুত সময়ে স্নাতকোত্তরের থিসিস গ্রুপের ফলাফল প্রকাশের নজির এর আগে কখনো দেখা যায়নি। ১৫ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে আবেদনের শেষদিন ছিলো। তার ঠিক ২ দিন আগে ফলাফল প্রকাশ করে আতিফা কাফিকে ওই পদে আবেদনের সুযোগ করে দেয়ার জন্য এমন তড়িঘড়ি করে ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।
বিভাগের ৪১তম আবর্তনের শিক্ষার্থীদের করা অভিযোগে বলা হয়েছে, স্নাতকোত্তর থিসিস গ্রুপের মৌখিক পরীক্ষায় শুধুমাত্র আতিফা কাফিকেই এ+ মার্ক দেয়া হয়েছে। এছাড়া পিএ-৫০১ নং কোর্সের বহিঃস্থ শিক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন নুরুল আমিন। ওই কোর্সে শুধুমাত্র ওই ছাত্রীই এ+ পেয়েছেন। থিসিস পেপার মূল্যায়নে স্বচ্ছতার জন্য থিসিস পেপারে শিক্ষার্থীর নাম লেখার নিয়ম না থাকলেও ওই ছাত্রীর নাম থিসিস পেপারের উল্লেখ ছিল বলে অভিযোগ থিসিস গ্রুপের অন্য শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আতিফা কাফির শরীরিক অসুস্থতা দেখিয়ে কারো সঙ্গে কোন পরামর্শ না করেই পরীক্ষা কমিটির সভাপতি নুরুল আমিন পিএ-৫০৩ নং কোর্সের পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন করেছিলো। জানা যায় ওইদিন কাফি অসুস্থ ছিল না। বরং ওই কোর্সের পরীক্ষার জন্য তার প্রস্তুতি ছিলো না তাই সে পরীক্ষা কমিটির সভাপতিকে ওই পরীক্ষাটি স্থগিত করতে বলে। সভাপতি ওই কোর্সটির পরীক্ষা স্থগিত করেছিল।
পরীক্ষা কমিটির সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বলেন, ‘কাফি ৫০১ নং কোর্স ও ভাইভাতে ভালো করেছে তাই সে এ+ পেয়েছে। এছাড়া বহিঃস্থ শিক্ষকদের কাছে প্রেরিত থিসিস পেপারে কাফির নাম ছিল না বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘একটি চক্র আমাকে ফাঁসানোর জন্য এমন ভিত্তিহীন ও অযৌক্তিক অভিযোগ তুলেছে। তবে আমার জায়গায় আমি সৎ ও দক্ষতার সঙ্গে আমার দায়িত্ব পালন করেছি’। তিনি ৫০৩ নং কোর্সের পরীক্ষা পেছানোর বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
ভিসি অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের মাধ্যমে লোক-প্রশাসন বিভাগের মাস্টার্সের পরীক্ষার অনিয়মের কথা শুনেছি। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে তদন্ত না করে এ বিষয়ে মন্তব্য করা আমার জন্য সমীচীন হবে না। ক্রেডিট- মানবজমিন।