যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক ছয় লেন করাসহ বেনাপোল স্থলবন্দরের উন্নয়নে নয় দফা দাবি জানানো হয়েছে। বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ (কিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়াডিং) এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আজ রোববার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব দাবি জানানো হয়।
সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক বলেন, দেশের বেশির ভাগ শিল্প-কলকারখানা ও তৈরি পোশাকশিল্পের কাঁচামাল বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি করা হয় বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে। এর মধ্যে এই বন্দর এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এই বন্দর দিয়ে বছরে অন্তত ২০ হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি-রপ্তানি হচ্ছে। বন্দর থেকে প্রতিবছর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সাত হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করছে সরকার। অথচ যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এই সড়কে ঝিকরগাছা সেতু অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এ ছাড়া বন্দরে পণ্য রাখার জায়গা নেই। পণ্য ওঠানো-নামানোর যন্ত্র বিকল।
বন্দর উন্নয়নের নয় দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, বেনাপোল-পেট্রপোল স্থলবন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত ভারতের যশোর রোডের দুই ধারের শতবর্ষী পুরোনো গাছ কেটে আমদানি-রপ্তানির সুবিধার্থে মহাসড়ক আট লেনে উন্নীত করেছে ভারত সরকার। সেই আদলে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের দুই পাশের শতবর্ষী গাছ কেটে সড়কটি ছয় লেনে উন্নীত করতে হবে। বন্দরের গুদামে পণ্যের ধারণক্ষমতা ৩০ হাজার মেট্রিকটনের। সেখানে পণ্য ওঠানো-নামানো হচ্ছে এক লাখ মেট্রিকটনের ওপরে। আরও ২০টি নতুন গুদাম নির্মাণ না করলে বাণিজ্যে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। ভারত থেকে আমদানি করা নতুন ট্রাক, বাস ও প্রাইভেট কার জায়গায় অভাবে রেলের খানাখন্দ জায়গায় খোলা আকাশের নিচে ফেলে রাখা হচ্ছে।
সিঅ্যান্ডএফের দাবির মধ্যে রয়েছে নতুন ইয়ার্ড নির্মাণ করা, পেট্রপোল থেকে বেনাপোল লিংক রোডের পাশে ৫০ একর জায়গা অধিগ্রহণ করে নতুন খোলা আঙিনা ও গুদাম নির্মাণ, বন্দরের প্রশাসনিক ভবনসহ ৫০ শয্যার একটি হাসপাতাল নির্মাণ। বন্দরে পণ্য ওঠানো-নামানোর জন্য ১০টি ক্রেন, ১০টি ফরকলিফটসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহের দাবিও জানানো হয়। এই বন্দর দিয়ে প্রতিদিন পাসপোর্টের মাধ্যমে পাঁচ হাজার থেকে সাত হাজার যাত্রী দুই দেশের মধ্যে আসা-যাওয়া করছে। এ জন্য চেকপোস্ট সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখতে হবে। পৃথিবীর অন্যান্য আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। সেখানে বেনাপোল-পেট্রপোলে থাকে আট ঘণ্টা। এ ছাড়া পণ্যের নমুনা নিরীক্ষার জন্য জরুরি ভিত্তিতে বেনাপোল কাস্টম হাউসে বিএসটিআইয়ের একটি শাখা অফিস স্থাপনের কোর দাবি জানানো হয়।
সম্মেলনে বক্তব্য দেন সংগঠনের সভাপতি মফিজুর রহমান, সহসভাপতি মো. নুরুজ্জামান, সাবেক সভাপতি শামসুর রহমান, শিল্প ও বণিক সমিতির ভারত-বাংলাদেশ উপকমিটির সভাপতি মতিয়ার রহমান, যুগ্ম সম্পাদক মহসীন মিলন, জামাল হোসেন প্রমুখ।
0 coment rios: