যশোরে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। জনমনে শঙ্কা থাকলেও বিশেষজ্ঞদের দাবি, এতে করে দ্রুত রোগী চিহ্নিতকরণসহ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে ...
যশোরে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। জনমনে শঙ্কা থাকলেও বিশেষজ্ঞদের দাবি, এতে করে দ্রুত রোগী চিহ্নিতকরণসহ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে এ রোগ। আর যক্ষ্মা রোগীর সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে নানা সীমাবদ্ধতা থাকলেও স্বাস্থ্য বিভাগের দাবি যে সক্ষমতা আছে তা দিয়ে সুচিকিৎসা দেয়া সম্ভব।
যক্ষা একটি জীবাণুঘটিত সংক্রামিত রোগ। এ জীবাণু মানুষের শ্বাসনালী দিয়ে প্রবেশ করে ফুসফুসকে আক্রান্ত করে। ফুসফুস ছাড়া শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়। ১৯৯৮ সাল থেকে এ রোগ নিয়ন্ত্রণে বিনামূল্যে চিকিৎসা ও প্রচারণা চালাচ্ছে সরকার। দীর্ঘ সময় পার হলেও যশোরে প্রতিবছরই বাড়ছে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা। মূলত জনসচেতনতার অভাব, অস্বাস্থ্যকর, স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ, ঘনবসতি, ধূমপানসহ নানা কারণে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. জি জি এ কাদরী বলেন, 'জনসংখ্যার ঘনত্ব, কুসংস্কার, রোগীর অসচেতন প্রভৃতির কারণে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।'
পরিসংখ্যান বলছে, প্রতিবছর যে পরিমাণ রোগী শনাক্ত হয় তার ৯৫ শতাংশই চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হচ্ছেন। কিন্তু পরের বছর তার চেয়েও বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে। বিগত ৫ বছরের পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে এ তথ্য। তবে বিশেষজ্ঞদের দাবি এতে করে দ্রুত রোগী চিহ্নিতকরণসহ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে এ রোগ। ২০১২ সালে জেলায় রোগী ছিল আড়াই হাজারের বেশি। এবছর ছয় মাসেই প্রায় আড়াই হাজার রোগী শনাক্ত হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বক্ষব্যাধী বিশেষজ্ঞ আব্দুল ওহাব তরফদার বলেন, 'যক্ষা নিয়ে চিন্তার কোন কোন কারণ নেই ।বরং যে রোগীর যক্ষ্মা ধরা পড়ছে তাদের চিকিৎসা ফলে আর যক্ষ্মা ছড়ানোর ভয় থাকে না।'
এদিকে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে সরকারের সহযোগী সংস্থা ব্র্যাক গ্রামে গ্রামে ডট্স পদ্ধতির সফল বাস্তবায়ন করলেও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে জনবল সংকটসহ রয়েছে নানা সীমাবদ্ধতা।
তবে স্বাস্থ্য বিভাগের দাবি, যে সক্ষমতা আছে তা দিয়েই ক্রমবর্ধমান রোগীদের সুচিকিৎসা দেয়া সম্ভব।
যশোরের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. হারুণ অর রশিদ বলেন, 'যথেষ্ট পরিমাণের ওষুধ আমাদের মজুদ আছে। আমরা ভালোভাবে এই রোগের মোকাবেলা করতে পারব।'
গত ৫ বছরে যশোরে যক্ষ্মায় মৃত্যু হয়েছে ৩শ ৪২ জনের। আর চিকিৎসায় গাফিলতির কারণে বর্তমানে ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা- এমডিআরে আক্রান্ত ৩১জন।
সময় টিভি