যশোর শহরে ইজিবাইক ও অটোরিকশা বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। গত রোববার জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিনের সভাপতিত্বে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। জেলা প্রশাসনের সম্মেলনকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
যশোর শহরে প্রতিদিন হাজার হাজার লোক চলাচল করে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শহরের দড়াটানা, হাসপাতাল মোড়, জজকোর্ট মোড়, এম এম আলী সড়ক, গাড়ীখানা, চিত্রা মোড়, চৌরাস্তা, মনিহার এলাকা, পালবাড়ি মোড়, খাজুরা বাসস্ট্যান্ড, চাঁচড়া মোড়, পুলেরহাট থেকে শহরে যান ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত রিকশা। কিন্তু তা বন্ধ করে দেয়ায় মানুষ বিপাকে পড়েছে। ওই দিন শহর ছিল ফাঁকা। কিছু রিকশা চললেও চালকেরা ভাড়া হেঁকেছেন তিন থেকে চার গুণ বেশি। এতে পথ চলতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে।
কয়েকজন পথচারীর সাথে কথা বললে জানা যায়, শহরে মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ইজিবাইক ও রিকশা। ইজিবাইক বন্ধ করে দেয়ায় আমরা বিপাকে পড়েছি।
দুপুরে যশোর জিলা ¯ু‹ল মোড়ে কথা হয় ঝিকরগাছা থেকে আসা স্কু শিক্ষক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরের সাথে। তিনি বলেন, যশোরের চলাচলের জন্য ইজিবাইক আর রিকশাই একমাত্র যান। আর ইজিবাইক তো দূরের কথা গ্রামের ভ্যানগুলোও ব্যাটারিতে চলছে। কী কারণে বন্ধ করা হলো জানি না, তবে বিকল্প পরিবহন না থাকায় যে দু-একটি চলছে তাতে ভাড়া আগের চেয়ে তিন গুণ বেশি নিচ্ছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ।
জিলা স্কুলের সামনে কয়েকজন ছাত্র অপেক্ষা করেছে রিকশার জন্য। তাদের মধ্যে তিনজন চাঁচড়া মোড়ে যাবে। তারা জানায়, এখান থেকে প্রতিদিন তারা পাঁচ টাকা দিয়ে ইজিবাইকে ওই মোড়ে যায়। এখন রিকশায় ৪০ টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে যেতে হবে। তাও রিকশা মিলছে না।
এ ব্যাপারে যশোর ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, ইজিবাইক প্রশাসন বন্ধ করে দিয়েছে, তবে তা কতটা যুক্তিযুক্ত হলো? এসব বাইক আমদানি করা। পৌরসভা অনেক বাইকের লাইলেন্সও দিয়েছে। দেশে হাজার হাজার ছেলেমেয়ে বেকার। তাদের নিজেদের চলমান কাজও বন্ধ হয়ে গেল। এসব মানুষ কী করে খাবে? বিকল্প ব্যবস্থা না করে ইজিবাইক বন্ধ করায় ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ।
শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ইজিবাইক বন্ধ না করে পরিকল্পিতভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যেত। বিষয়টি যারা করেছেন তাদের জনগণের কথা বিবেচনা করে দেখা দরকার।
কালিগঞ্জ বারোবাজার ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক এস এম সোহেল বলেন, ‘আমদানি আর বিক্রি বন্ধ না করে চলন্ত ইজিবাইক বন্ধ করা কোনো ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হতে পারে না। শহরকে বাসযোগ্য করতে এবং মানুষের ভোগান্তি কমাতে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে হবে প্রশাসনকে।
0 coment rios: