যশোরের আইনজীবী আমির হোসেনকে (সমিতি থেকে বহিষ্কৃত) জামিনের শর্ত ভঙ্গ করায় নারী নির্যাতন মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। রোববার ধার্য ...
যশোরের আইনজীবী আমির হোসেনকে (সমিতি থেকে বহিষ্কৃত) জামিনের শর্ত ভঙ্গ করায় নারী নির্যাতন মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
রোববার ধার্য দিনে আদালতে হাজির হলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক জেলা ও দায়রা জজ আমিনুল ইসলাম শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
আমির হোসেন যশোর সদর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের ডহেরপাড়া গ্রামের মৃত সাবির হোসেন মিয়ার ছেলে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি এম ইদ্রিস আলী জানিয়েছেন, গত ৮ আগস্ট শহরের বাবুবাজার এলাকার বঞ্চিতা সমাজকল্যাণ সংস্থার সভানেত্রী নুরুন্নাহার রানু যৌতুকের দাবিতে হত্যাচেষ্টা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ‘স্বামী’ আমির হোসেনের নামে কোতয়ালী থানায় একটি মামলা করেছিলেন। আমির হোসেন এ মামলায় হাইকোর্ট থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন নিয়ে আসেন। জামিনের শর্ত অনুযায়ী তিনি গত ৮ অক্টোবর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান। ট্রাইব্যুনালে ভারপ্রাপ্ত বিচারক জেলা ও দায়রা জজ আমিনুল ইসলাম মীমাংসার শর্তে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত তাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন।
রোববার আমির হোসেন ধার্য দিনে আদালতে হাজির হয়ে আবার জামিন আবেদন করেন। কিন্তু জামিনের শর্ত পূরণ না করায় আবেদন খারিজ করে দেন আদালত আসামি অ্যাডভোকেট আমির হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, প্রায় পাঁচ বছর আগে আমির হোসেনের সঙ্গে রানুর বিয়ে হয়। বিয়ে পর তারা শহরের বাবুবাজার ঝালাইপট্টি এলাকায় রানুর দোতলা বাড়িতে বসবাস করতেন। বিয়ের কাগজপত্র আমির হোসেন নিজের হেফাজতে রাখেন। ঘরসংসার করাকালে আমির কাশিমপুর ইউনিয়ন থেকে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হন। নির্বাচনী খরচের জন্য তিনি রানুর কাছ থেকে নগদ দশ লাখ টাকা এবং বিভিন্ন সময়ে আরো ২০ লাখ মিলিয়ে মোট ৩০ লাখ টাকা নেন। এছাড়া পাঁচ ভরি ওজনের একটি সোনার হার (চেইন) তার কাছ থেকে হাতিয়ে নেন আমির।
গত ১৪ জুলাই রাত নয়টার দিকে আমির আরো পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকার করায় তার গলা চেপে শ্বাস রোধ করে হত্যার চেষ্টা করেন আমির। রানুর চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এলে আমির দ্রুত পালিয়ে যান। এরপর থেকে আমির আর রানুর সঙ্গে যোগাযোগ রাখেননি। ঘোপ সেন্ট্রাল রোডে তার ভাই-ভাবির বাড়িতে গিয়ে ওঠেন আমির।
অভিযোগ করা হয়, গত ৪ আগস্ট আমির মোবাইল ফোনে রানুকে ঘোপের খসরু মিয়ার বাড়িতে ডেকে নেন। রানু সরল বিশ্বাসে সেখানে গেলে আমির তার কাছে ফের পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকার করায় আমির একটি লোহার পাইপ দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে বেধড়ক মারপিট করেন। সে সময় আমিরের ভাবি ফতে বেগম এবং তার ভাইপো রাব্বীও রানুকে মারপিট করেন। আশেপাশের লোকজন এসে তাকে রক্ষা করেন। আমির সে সময় তাকে স্বামী হিসেবে দাবি না করার জন্য শাসিয়ে দেন।
মীমাংসায় ব্যর্থ হয়ে গত ৮ আগস্ট আইনজীবী আমির হোসেন এবং তার ভাবি ফতে বেগম ও ভাতিজা রাব্বীকে আসামি করে কোতয়ালী থানায় একটি মামলা করেন রানু। অভিযোগের ভিত্তিতে আইনজীবী আমির হোসেনকে যশোর আইনজীবী সমিতি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।