যশোরের চৌগাছায় নাজমা বেগম (২৫) নামে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে নির্যাতনের পর মুখে কীটনাশক ঢেলে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত নাজমা উপজেলার বহিলাপাতা গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী একরামুলের স্ত্রী এবং একই উপজেলার বল্লভপুর গ্রামের মৃত-আজগর আলীর মেয়ে। তিনি বহিলাপোতা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ছিলেন। সোমবার সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে চৌগাছা হাসপাতালে নাজমার মৃত্যু হয়।
নিহতের মামা সামাউল ইসলাম ও বোন জামাই আরমান আলী জানান, কয়েক বছর আগে পিতা-মাতাহীন এতিম নাজমার বিয়ে হয় উপজেলার বহিলাপোতা গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে একরামুলের সাথে। বিয়ের পরে সাইকেল, ঘড়িসহ আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র দেয়া হয়। তবুও নাজমার শ্বশুর-শাশুড়ি যৌতুকের জন্য নাজমাকে নিপীড়ন করত। চলতি বছরের শুরুর দিকে নাজমার স্বামী একরামুল বিদেশ যাওয়ার সময় যৌতুকের টাকা এনে দিতে বলে। সেসময় নাজমা বাবার বাড়ি যে জমি পেত তা বিক্রি করে ৩ লক্ষ টাকা দিয়ে একরামুলকে বিদেশ পাঠানো হয়। এরপরও কিছুদিন আগে আগে নাজমার শ্বশুর-শাশুড়ি তাকে মারধর করে। আমরা এসে মীমাংসা করে দিয়ে যাই। সোমবার সকালে মোবাইল ফোনে খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে দেখি নাজমার মৃত্যু হয়েছে। নাজমার গলায় এবং শরীরে নির্যাতনের দাগ রয়েছে। নাজমার শ্বশুর-শাশুড়ি নির্যাতনের পর তার মুখে কীটনাশক ঢেলে দিয়েছে।
তারা আরো জানান, নাজমা যখন খুবই ছোট তখন একইদিনে তার পিতা-মাতা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান। এরপর চাচী শেফালী খাতুনের কাছে পালিত হন। তারা উভয়ে জানান এবিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হবে।
নাজমার শ্বশুর আলাউদ্দিন জানান, রাত বারটার দিকে সে বিষ খায়। রাত ১টায় হাসপাতালে নিয়ে আসি। সকালে তার মৃত্যু হয়। হত্যার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমি যা বলেছি এর বেশি কিছু জানিনা। তবে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে দায়িত্বরত আব্দুল হাই জানান, ভোর ৪ টা ১৫ মিনিটে নাজমাকে হাসপাতালে আনা হয়।
নিহতের চাচাতো ভাই ও সুখপুকুরিয়া ইউপির বল্লভপুর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম জানান, মৃতদেহ দেখে কোনভাবেই আত্মহত্যা মনে হচ্ছে না। আমরা এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
চৌগাছা থানার ওসি খন্দকার শামীম উদ্দিন বলেন, লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
0 coment rios: