পাথর থেকে রক্ষা পেতে যুবককে জিপের সামনে বেঁধে ঢাল বানানোর অভিযোগ উঠেছে কাশ্মীর উপনির্বাচনে দায়িত্বপালনরত ভারতীয় সেনাসদস্যদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সেনা জিপের সামনে দড়ি দিয়ে বাঁধা রয়েছে এক যুবক। যেটা দেখে আপাত ভাবে মনে হচ্ছে, উন্মত্ত জনতা যাতে জিপে পাথর ছুড়তে না পারে, তাই ওই যুবককেই জীবন্ত ঢাল বানিয়ে ব্যবহার করেছে সেনা।
ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পরে তোলপাড় শুরু হয়েছে। আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, যুবকের নাম ফারুক দার। বাদগামের সিতাহরন গ্রামের বাসিন্দা তিনি। রাজ্য প্রশাসন তদন্তে নেমে জেনেছে, ৫৩ রাষ্ট্রীয় রাইফেলস-এর জওয়ানরাই এ ঘটনায় জড়িত।
তদন্তকারীদের ফারুক জানিয়েছেন, তিনি ভোট দিতে বেরিয়েছিলেন। তার পরে বোনের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে জওয়ানেরা তাঁকে পাকড়াও করে। সেনা ইউনিটটি নির্বাচন কর্মীদের সঙ্গে গ্রামে ঢোকার চেষ্টা করছিল। ফারুকের দাবি, তাঁকে জিপে বেঁধে প্রায় ১০-১২টি গ্রামে ঘোরানো হয়েছে। আবার সেনা সূত্রের দাবি, ১০০ মিটার পরেই ফারুককে ছেড়ে দেওয়া হয়দূরত্ব যাই হোক না কেন, এমন অমানবিক কাজ সেনাবাহিনী কী করে করল, সেই প্রশ্নেই ফের ক্রুদ্ধ কাশ্মীর। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, ভিডিওটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেছেন, তিনি এই বিষয়টি সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত কিছু জানেন না। তবে এমন ঘটনা ঘটে থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা টুইটারে লিখেছেন, ‘পাথর থেকে বাঁচতে বাহিনী একটি মানুষকে ঢাল বানাল কী করে? আমি হতবাক!’ ঘটনার পূর্ণ তদন্তের দাবিও করেছেন তিনি। ভিডিওটি বিরওয়াহ অঞ্চলের বলে মনে করা হচ্ছে। সেটি ওমরের নির্বাচনী কেন্দ্রেই পড়ে।
সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল রাজেশ কালিয়া দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, সেনাবাহিনী ওই ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করছে। ভিডিওটিতে এক সেনা সদস্যকে বলতে শোনা গেছে, ‘যারা পাথর নিক্ষেপ করবে তারা একই পরিণতি ভোগ করবে।’ ভিডিওটিতে দেখা গেছে সেনাবাহিনীর টহল দলের সামনে গাড়িটি এগিয়ে চলছে।
0 coment rios: