‘আমরা শিশু, আমাদের বাবা আমাদের লালন-পালন করছেন। মাকে আমরা চিনি না। আমাদেরকে জোর করে মায়ের কাছে দিতে গেলে আত্মহত্যা ছাড়া আমাদের আর কোনো...

‘আমরা শিশু, আমাদের বাবা আমাদের লালন-পালন করছেন। মাকে আমরা চিনি না। আমাদেরকে জোর করে মায়ের কাছে দিতে গেলে আত্মহত্যা ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় থাকবে না।’ মঙ্গলবার দুপুরে কুষ্টিয়ার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতের এজলাসের সামনে দাঁড়িয়ে ১২ বছরের শিশু সোহা এভাবেই আকুতি জানায়। কিন্তু আইনের কাছে মানবিক বিষয়টি গুরুত্ব পায়নি। আদালত তাদেরকে মায়ের হেফাজতে রাখার আদেশ দেন।
আদালতের এ আদেশ মেনে নিতে পারেনি তিন ভাই-বোন। বড় সন্তান সোহা চিৎকার করে তাদেরকে বাবার কাছে ফিরিয়ে দেয়ার আবেদন জানায়। এরপর বিকেলে দুই পক্ষের উপস্থিতিতে আরেকবার আদালত বসানো হয়।
মা-বাবা আর সন্তানদের উপস্থিতিতে দীর্ঘ সময় পর আরেক দফা রায় ঘোষণা করেন আদালত। বাদী-বিবাদীর সম্মতিতে রায়ে দুই বছর সাত মাসের সন্তান ফারাবীকে তার মায়ের হেফাজতে দেয়া হয়। বাকী দুই সন্তান ১২ বছরের সোহা আর ৭ বছরের তাহশীদকে বাবার হেফাজতে থাকার আদেশ দেন।
তবে এই আদেশেও খুশি হতে পারেনি তিন সন্তান। রায় শোনার পর তিন শিশু আদালত কক্ষেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে মা তার ছোট সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন আর অন্য দুই সন্তান তাদের বাবার সঙ্গে চলে যায়। মঙ্গলবার বিকেলে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সীমা শারমীনের আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালের ৪ মে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ভাদালিয়া গ্রামের তৌহিদুল ইসলাম তারিকের সঙ্গে আলমডাঙ্গা উপজেলার থানাপাড়া এলাকার সানজিদার বিয়ে হয়। পারিবারিক কলহের কারণে দীর্ঘ ১৩ বছরের দাম্পত্য জীবনের বিচ্ছেদ ঘটে। ওই সময় স্ত্রী সানজিদা বাবার বাড়িতে চলে গেলে তাদের তিন সন্তান নিয়ে তারিক নিজ বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন।