শর্ট স্লিপে প্রথমে দুইজন। পরে তিনজন। শর্টঅফে একজন। লেগ সাইডেও একজন। সঙ্গে অধিনায়ক কোহলির অস্থির আগ্রাসন। বোলারের কাছাকাছি ফিল্ডিং। প্রতি...

শর্ট স্লিপে প্রথমে দুইজন। পরে তিনজন। শর্টঅফে একজন। লেগ সাইডেও একজন। সঙ্গে অধিনায়ক কোহলির অস্থির আগ্রাসন। বোলারের কাছাকাছি ফিল্ডিং। প্রতিটি মুহূর্ত বোলারের চেয়ে তিনিই যেন বেশি অস্থির। একে বলে মানসিক খেলা। কোহলি যে খেলায় বাংলাদেশকে ভড়কে দিতে চেয়েছেন। তবে সবাইকে পারলেও সাকিবকে ভড়কে দিতে পারেননি তিনি।
চতুর্থদিন শেষে বিকেলে সচেতনভাবে ফ্রন্টফুট ব্যবহার করেছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। জাদেজাকে পরপর দুই চারও মারেন। তার এমন সাহসের জোরেই এই টেস্ট ড্র করার স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। পঞ্চমদিন ৭ উইকেট হাতে নিয়ে ৩৫৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
এই ম্যাচ জিততে হলে বাংলাদেশকে ‘অসাধ্য সাধন’ করতে হবে। কেননা ভারতের মাটিতে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ রান তাড়ার সাফল্যটি ৩৮৭ রানের। চেন্নাইতে ২০০৮ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারত নিজেরাই ঘরের মাঠে রান তাড়ার এই রেকর্ডটি গড়েছিল। যেখানে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ইনিংসটিই ৪০০ রানের। নিজেদের প্রথম টেস্টে ভারতের বিপক্ষে এই রান ছুঁয়েছিল বাংলাদেশ। তারপর আর দলটির বিপক্ষে এত রান তোলা সম্ভব হয়নি।
সেই অসম্ভবকেও ‘সম্ভব’ করা সম্ভব, এ কথা হয়তো ভাবা যাচ্ছে না। তবে ‘একটা কিছু হতে পারে’ সেই আশা করতে দোষ কোথায়।
রোববার মিরাজকে হারিয়ে দিন শুরু হয় বাংলাদেশের। নিরাশার মেঘ তখনই উঁকি দিয়েছিল। সেই মেঘ আড়াল করার প্রাণপণ চেষ্টা করেন কাপ্তান মুশফিক। কিন্তু কোহলির আক্রমণাত্মক ফিল্ডিং পরিকল্পনার সামনে সঙ্গী তাসকিনকে ধরে রাখতে ব্যর্থ হন। তাসকিন ফিরে গেলেও আরেক প্রান্ত থেকে মুশফিক স্কোরটা ৩৮৮ পর্যন্ত টেনে নিয়ে থামেন।
সবাইকে অবাক করে কোহলি ফলোঅন না করানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাটে নেমে পড়েন। ৪ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ রান পর্যন্ত দীর্ঘ হয় ভারতের ইনিংস। বাংলাদেশের জন্য জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪৫৯। তখন হাতে অক্ষত পুরো চারটি সেশন।
ভারত প্রথম ইনিংসে ৬৮৭ রান তোলার পর ‘ডিক্লেয়ার’ করে। জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশ শুরু থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায়। পরে সাকিব-মুশফিক ১০৭ রানের জুটি গড়লে কিছুটা স্বস্তি ফেরে। এরপর মিরাজকে নিয়ে টাইগার দলপতি নিরাপদে দিন পার করেন। কিন্তু চতুর্থ দিন সেই ছন্দ আর ধরে রাখতে পারেননি।
শেষ বিকেলে দ্বিতীয় ইনিংসে তামিম (৩) দলীয় ১১ রানে ফিরে যান। সৌম্য ব্যক্তিগত ৪২ রানে বিদায় নেয়ার সময় দলকে রেখে যান ৭১ রানে। যেভাবে খেলছিলেন তাতে দিন পার করা অসম্ভব মনে হচ্ছিল না। কিন্তু ‘ক্ষণিকের ভুলে’ বিপদে পড়েন। মুমিনুলও (২৭) অশ্বিনের সামনে দাঁড়াতে পারেননি। একটি বল ব্যাকফুটে খেলতে যেয়েই শর্ট স্লিপে ধরা পড়েন। সাকিব ২১ ও মাহমুদউল্লাহ ৯ রানে শেষদিনের লড়াই এগিয়ে নিতে নামবেন।