দীর্ঘ জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশে পেপ্যালের কার্যক্রম শুরুর ক্ষেত্রে বড় অগ্রগতি হয়েছে। এ দেশে সেবা দিতে সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে ...
দীর্ঘ জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে
বাংলাদেশে পেপ্যালের কার্যক্রম শুরুর ক্ষেত্রে বড় অগ্রগতি হয়েছে। এ দেশে
সেবা দিতে সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করেছে বিশ্বব্যাপী
ফ্রিল্যান্সারদের অর্থ লেনদেনের জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠানটি।
চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটির ভারপ্রাপ্ত
ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) দিদার মো. আব্দুর রব।
কার্যক্রম চালুর বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে
পেপ্যালের একটি দল কিছুদিন আগে ঢাকা ঘুরে গেছেন। দেশে এ সেবা চালুর বাস্তব
পরিস্থিতিসহ নানা পর্যালোচনা ও অনুসন্ধানে ফিল্ড ওয়ার্কও করেছে তারা।
তাদের হয়ে দেশে এ কাজ অব্যাহত রেখেছে ‘টোয়োন্টিফোর মি’ নামের একটি
প্রতিষ্ঠান।
পেপাল বাংলাদেশে আসছে বুধবার বিকালে এমন
খবর প্রকাশের পর এ নিয়ে অনেকের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। তথ্যপ্রযুক্তি
খাতের অনেকে মনে করছেন এবারও আগের মতো এটি শুধু কথার কথা। তবে এ চুক্তির
মাধ্যমে কার্যক্রম শুরুর ক্ষেত্রে একধাপ অগ্রগতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, পেপালের প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশ ব্যাংক, সোনালী ব্যাংকসহ সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আলাপ-আলোচনাও করে গেছে।
সোনালী ব্যাংকের এমডি দিদার মো. আব্দুর রব
টেকশহর ডটকমকে জানান, ‘সব ধরণের পর্যবেক্ষণ শেষে খসড়া চুক্তি প্রস্তুত করে
তাতে সই করে পেপ্যালের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছিল। সম্প্রতি পেপ্যাল
কর্তৃপক্ষ আমাদের নিশ্চিত করেছে তারাও চুক্তিতে সই করে তা পাঠিয়ে দিয়েছেন।
আশা করছি শিঘ্রই চুক্তিপত্রটি পেয়ে যাবো আমরা।’
সোনালী ব্যাংকের পক্ষে ওই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন ব্যাংকটির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) পর্যায়ের এক কর্মকর্তা।
এর ফলে বাংলাদেশে পেপ্যালের কার্যক্রম
শুরুর বিষয়ে আর সংশয় থাকছে না। এ চুক্তির পর কার্যক্রম শুরুর প্রক্রিয়া
হাতে নেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
এর আগে বুধবার বিকালে তথ্যপ্রযুক্তি
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক দেশে পেপ্যালের কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে খুব
তাড়াতাড়ি সুখবর দেওয়ার কথা জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন,”আমাদের
ফ্রিল্যান্সারদের দীর্ঘদিনের দাবি পেপ্যালকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা। এ বিষয়ে
প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে ও
তত্ত্বাবধানে আমরা দীর্ঘদিন ধরে পেপ্যালের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।
আলোচনায় অনেক অগ্রগতি হয়েছে। আমরা আশাবাদী কিছুদিনের মধ্যে হয়তো একটা সুখবর
দিতে পারবো।”
পেপ্যাল আসছে বিকালে এমন খবর প্রকাশের পর
টেকশহর ডটকম চুক্তির বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে খোঁজ খবর নেওয়া শুরু করে।
তখন দেশে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে পেপ্যাল তাদের কার্যক্রম শুরু করবে এটি
নিশ্চিত করেছে সূত্র।
এর আগে বুধবার দুপুরে পেপ্যালের সঙ্গে
সোনালী ব্যাংকের চুক্তির বিষয়ে এক যুগ্ম-সচিবের স্ট্যাটাসের পর বিষয়টি
আলোচনায় আসে। চুক্তির বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কোনো দপ্তরই নিশ্চিত করছিল না। ফলে
বিষয়টি নিয়ে নানা মতভেদ শুরু হয়।
স্যোশাল মিডিয়ায় এ তথ্যের যর্থাথতা নিয়ে
নানা বিতর্ক চলতে থাকে। ফ্রিল্যান্সারসহ তথ্যপ্রযুক্তি খাত সংশ্লিষ্টদের
অনেকেই এটিকে বরাবরের মতো আশ্বাস হিসেবে সংশয় প্রকাশ করছিলেন।
এর আগে ২০১৫ সালের জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রে
পেপ্যালের ভাইস প্রেসিডেন্টের সাথে বৈঠক করেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী
জুনাইদ আহমেদ পলক। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সদ্য বিদায়ী বেসিস সভাপতি শামীম
আহসানও।
ওই বৈঠকে পেপ্যাল না আনা গেলেও তার বদলে
মানি ট্রান্সফার কোম্পানি জুম বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরুর কথা জানানো হয়।
প্রতিমন্ত্রী ওই বৈঠকে বাংলাদেশে বর্তমান ব্যবসায়িক সুযোগ-সুবিধা ও পলিসি
সাপোর্টের বিষয়ে পেপ্যালকে আশ্বস্ত করেন।
পেপ্যালও বাংলাদেশ কার্যক্রম চালুর বিষয়ে
নিজেদের অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনা ও বাংলাদেশে ব্যবসায়িক সম্ভাবনার বিষয়টি
খতিয়ে দেখবে বলে তখন জানিয়েছে।
পলক তখন বলেছিলেন, পেপ্যালকে যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশে নিয়ে আসতে আমাদের নিরবিচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা থাকবে।
অবশেষে সেই আশ্বাস ও প্রচেষ্টা বাস্তবে রূপ নিচ্ছে।