পাঁচ শিক্ষক দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের অননুমোদিত ছুটিতে থাকার কথা অধ্যক্ষ স্বীকার করলেও এখনো কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে জানান।
২০১৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি যশোর মেডিকেল কলেজে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেওয়ার পর থেকে ডা. এ বি এম নাজমুল হুদা কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। তিনি বসবাস করেন বরিশালে। ডেন্টাল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোস্তাক হোসেন সাত্তার ২০১৩ সালের ১৫ জুন যশোরে যোগদান করলেও অবস্থান করেন ঢাকায়। তিনি সেখানে দিব্যি প্রাইভেট প্র্যাকটিস করছেন। নয় মাস কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন প্যাথলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আবদুল মজিদ সরদার। চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিজ বাড়িতে অবস্থান করে তিনি ক্লিনিক ব্যবসা করছেন।
সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে গত ৯ মার্চ যশোর মেডিকেল কলেজে যোগ দেন ডা. শেখ ছাইদুল হক। শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে নয়, নিজ কন্যা এ মেডিকেল কলেজের ছাত্রী হওয়ায় তিনি মাঝে-মধ্যে কর্মস্থলে আসেন।
নতুন প্রতিষ্ঠান হওয়ায় যশোর মেডিকেল কলেজে এমনিতেই শিক্ষক সংকট রয়েছে। তার ওপর পাঁচ শিক্ষকের অনুপস্থিতি ভোগান্তিতে ফেলেছে শিক্ষার্থীদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, শিক্ষকদের অনুপস্থিতিতে তারা দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষকে বার বার বলা সত্বেও সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।
অনুপস্থিত পাঁচ শিক্ষকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলেও একজন বাদে কেউ ফোন রিসিভ করেননি। খুলনায় অবস্থানরত ডা. শেখ জাহিদ বখশ কর্মস্থলে অনুপস্থিতির কথা স্বীকার করেন। তবে তিনি দাবি করেন, অসুস্থতার দরুণ এমনটি হচ্ছে।
অসুস্থতা বা অন্য কোনো অজুহাতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলেও ওই পাঁচ শিক্ষক মাস শেষে এসে ঠিকই বেতন-ভাতা গ্রহণ করছেন। ফিরে গিয়ে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করছেন নিয়মিত।
কর্মস্থলে পাঁচ শিক্ষকের অনুপস্থিতির কথা স্বীকার করেছেন যশোর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. আবু হেনা মো. মাহবুব উল মওলা চৌধুরী।
তিনি বলেন, “বিষয়টি নিয়ে কলেজের শিক্ষকদের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। দ্রুত কর্মস্থলে এসে পাঠদান করতে তাদের চিঠিও দেয়া হয়েছে। এতেও কোনো ফল হয়নি।”
প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ বলেন, “অনুপস্থিত শিক্ষকরা অত্যন্ত ক্ষমতাধর। তাই তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ সহজ নয়।”
0 coment rios: