মাননীয় কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, বিজ্ঞানী, সম্প্রসারণকর্মী ও সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলে দেশে খাদ্য উৎপাদনে যুগান্তকারী সাফ...
মাননীয়
কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, বিজ্ঞানী, সম্প্রসারণকর্মী ও সরকারের
ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলে দেশে খাদ্য উৎপাদনে যুগান্তকারী সাফল্য এসেছে।
খাদ্য উৎপাদনের এ সাফল্যকে টেকসই রূপ দিতে হবে। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪, বুধবার
গাজীপুরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) মিলনায়তনে ‘ব্রি বার্ষিক
গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালা ২০১৩-২০১৪’ এর উদ্বোধনী সভায় প্রধান অতিথির
বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
মাননীয়
কৃষিমন্ত্রী সরকারের সাফল্য তুলে ধরে জানান, কৃষকদের মাত্র দশ টাকায়
ব্যাংক একাউন্ট খোলার সুযোগ দেয়ায় গ্রামে এখন আর ‘মহাজন’ খুঁজে পাওয়া যায়
না। স্বল্পমেয়াদি, উচ্চ ফলনশীল এবং পানি সাশ্রয়ী জাত উদ্ভাবনের প্রতি
বিজ্ঞানীদের সদা সচেষ্ট থাকতে বলেন। মাননীয় কৃষিমন্ত্রী কৃষি গবেষণা ও কৃষি
সম্প্রসারণের যৌথ প্রয়াসের মাধ্যমে সঠিক সময়ে লাগসই প্রযুক্তিগুলো কৃষকের
মাঝে পৌঁছে দেয়ারও আহ্বান জানান।
কৃষি
মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. এস এম নাজমুল ইসলামের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে
আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড.
আবুল কালাম আযাদ, ব্রি’র মহাপরিচালক ড. জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস, কৃষি
সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ জেড এম মমতাজুল করিম, ব্রি’র পরিচালক
(প্রশাসন ও সাধারণ পরিচর্যা) ড. মো. শাহজাহান কবীর এবং ব্রি’র পরিচালক
(গবেষণা) ড. মো. আনছার আলী।
কৃষি
সচিব তাঁর বক্তব্যে বলেন, খাদ্যে স্বয়ম্ভরতা ধরে রেখে খাদ্য রপ্তানির
পরিমাণ বাড়াতে হবে। তিনি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরো সচেষ্ট হতে বলেন।
নতুন নতুন জাত ও কলাকৌশল উদ্ভাবনের পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য তিনি
সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
ব্রি’র মহাপরিচালক ড. জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস
কর্মশালার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে জানান, ব্রি এ পর্যন্ত ৭২টি উফশী
ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে তার মধ্যে বেশক’টি প্রতিকূল পরিবেশ সহনশীল। এগুলো
কৃষক পর্যায়ে জনপ্রিয় হবে এবং সামগ্রিকভাবে ধানের উৎপাদন বাড়বে বলে তিনি
আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিশেষজ্ঞ
বক্তারা জানান, ব্রি গত ২০১৩-১৪ বছরে সাতটি উফশী ধানের জাতসহ বেশ কিছু
নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও উন্নয়ন করেছে। উদ্ভাবিত এ জাতগুলোর মধ্যে রয়েছে
লবণাক্ততা সহনশীল বোরো জাত ব্রি ধান৬১ ও ব্রি ধান৬৭, জিঙ্ক সমৃদ্ধ ব্রি
ধান৬২ ও ব্রি ধান৬৪, ঐতিহ্যবাহী বালাম চালের অনুরূপ বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন এবং
সরু বালাম নামে পরিচিত জাত ব্রি ধান৬৩, সরাসরি বপনযোগ্য আগাম আউশ ধানের জাত
ব্রি ধান৬৫, খরাসহনশীল ও উচ্চমাত্রার প্রোটিনসমৃদ্ধ বোরোজাত ব্রি ধান৬৬,
বোরো মৌসুমের আদর্শ উফশীজাত ব্রি ধান৬৮ এবং কম খরচে আবাদযোগ্য উফশীজাত ব্রি
ধান৬৯। বর্তমানে দেশের ৮০ ভাগ জমিতে ব্রি উদ্ভাবিত ধানের জাতের চাষাবাদ হয়
এবং এ থেকে আসে দেশের মোট ধান উৎপাদনের শতকরা ৯১ ভাগ।
অনুষ্ঠানে
ব্রি, বারি, বিএআরসি, ডিএই, ইরিসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও
বিশ^বিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
পাঁচদিনব্যাপী কর্মশালায় গত একবছরে ব্রি’র ১৯টি গবেষণা বিভাগ ও নয়টি
আঞ্চলিক কার্যালয়ের গবেষণা ফলাফল সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সামনে উপস্থাপনের
উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।